এখনই শেয়ার করুন।

The late former chief minister has pledged to donate his body. Know more…

সংবাদ জনকণ্ঠ ডেস্ক: প্রয়াত বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বর্ষিয়ান সিপিআইএম নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। সকাল ৮টা ২০ নাগাদ নিজের বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেও সেই খবর প্রকাশ্যে আসে প্রায় ঘন্টা দেড়েক পর। আর তারও বেশ কিছু সময় পর সিপিআইএম-এর রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম জানান দেহদানের অঙ্গীকার করে গিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।

সেই অঙ্গীকার মতো শুক্রবার বিকেলে নীলরতন সরকার হাসপাতালে কিংবা অন্য কোনও সরকারি হাসপাতালে তাঁর দেহ চিকিৎসার গবেষণার জন্য দান করা হবে।এর আগে, জ্যোতি বসু, সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়, মানব মুখোপাধ্যায়, শ্যামল চক্রবর্তী, সমর মুখোপাধ্যায়, অনিল বিশ্বাস, বিনয় চৌধুরীর মতো সিপিআইএম-এর অনেক নেতাই দেহ দান করেছেন।

একই অঙ্গীকার করা আছে বিমান বসু, বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, সূর্যকান্ত মিশ্রদের। কিন্তু ভেবে দেখেছেন কি কেন কমিউনিস্ট নেতারা প্রায় সকলেই দেহ দান করেন? আজ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রয়াণ দিবসে আসুন জেনে নিই এর আসল সত্য – আসলে কমিউনিস্ট নেতাদের এই দেহদানের প্রথার পিছনে রয়েছে এক সামাজিক আন্দোলন এবং একটি বেসরকারি সংগঠন। যার নাম গণদর্পণ। আর এই সংগঠনের সঙ্গে ওতোপ্রোত জড়িয়ে থাকা একটি নাম ছিল ব্রজ রায়। ১৯৫৭ সালে মাত্র একুশ বছর বয়সে অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হয়েছিলেন ব্রজ রায়। তিন দশক পর তিনিই মরণোত্তর দেহদানের আন্দোলন শুরু করেছিলেন। ১৯৭৭ সালে একটি সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন হিসেবে কুসংস্কার প্রতিরোধে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন গণদর্পণ সংস্থার। যে সংস্থার মূল বার্তায় ছিল, মরদেহ কবর দিলেই কিংবা তাঁর শেষকৃত্য করলেই যে পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পন্ন হয় তা কিন্তু নয়। বরঞ্চ আপনার দেহ চিকিৎসার ক্ষেত্রে কাজে লাগলে কিংবা আপনার অঙ্গদানে অসহায় মানুষের আয়ু বৃদ্ধি পেলে তাতেই আসল মুক্তি ঘটে।

এই পর্যায়ে তাদের মনে প্রশ্ন জাগে, একজন মানুষের মৃত্যুর পর তার জন্মসূত্রে পাওয়া ধর্মীয় পরিচয় অনুযায়ীই অন্তিম সংস্কার করা হয়। কিন্তু, যারা সেই ধর্মীয় পরিচয় মানে না, যারা বস্তুবাদী, তাদেরও ধর্মীয় পরিচয় মেনেই শেষকৃত্য হবে কেন? তাছাড়া, কোনও মানুষ বেড়ে ওঠেন সমাজে। মৃত্যুর পর তাঁর দেহটি সমাজের হবে নাই বা কেন? পরিবারের হতে তুলে দেওয়া মানেই তো তা ব্যক্তিগত মালিকানাকে স্বীকৃতি দেওয়া। তাহলে উপায় কি?আর সেখান থেকেই শুরু হয় ভাবনা। তাঁদের সামনে ছিল বিজ্ঞানী জেবিএস হলডেনের উদাহরণ। ১৯৬৪ সালের ১ ডিসেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়েছিল।

মৃত্যুর পর তাঁর দেহ অন্ধ্র প্রদেশে দান করা হয়েছিল। এরপর সেই সামাজিক আন্দোলনের রীতিকেই পথ প্রদর্শক করে নেন ব্রজ রায়। আর তারপর থেকেই প্রায় সকল কমিউনিস্ট নেতাই দেহদানের অঙ্গীকার করেছেন। আর এখনও বর্তমান কমিউনিস্ট নেতারাও সেই পথেই হেঁটে চলেছেন। আর আজ সেই পথে সিলমোহর দিয়ে দিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী!

By admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *