এখনই শেয়ার করুন।

তারক হরি, পশ্চিম মেদিনীপুর: একজন পিতা যেমন তার সন্তানকে আদরে বুকে টেনে নেয়, তেমনই প্রকৃতি ও পরিবেশকে সন্তান মনে করে লালন-পালন করছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেবরার বাসিন্দা দিলীপ সাঁতরা। একসময় তিনটি গাছ দিয়ে শুরু করেছিলেন, আজ সেই সংখ্যা পৌঁছেছে তিনশোতে। প্রতিটি গাছ যেন তার কাছে একেকটি সন্তান। প্রতিটি ফুলের সৌন্দর্য, প্রতিটি পাতার সবুজাভ ঔজ্জ্বল্য তার জীবনের আনন্দ হয়ে উঠেছে।

দিলীপবাবু বলেন, “যখন প্রথম গাছ লাগালাম, মনে হলো যেন নতুন জীবন দিলাম। সেই গাছটি যখন বাড়তে শুরু করল, মনে হলো আমার সন্তানের মতোই বড় হচ্ছে। গাছের প্রতিটি পাতায়, প্রতিটি ফুলে আমি আমার অস্তিত্ব খুঁজে পাই। গাছ লাগানো শুধু শখ নয়, এটা আমার ভালোবাসা, আমার বাঁচার কারণ। পৃথিবীকে কিছু ফিরিয়ে দিতে চাই—এই গাছই আমার ছোট্ট অবদান।”আজ তার স্বপ্নের বাগান ফুলে ফুলে ভরে গেছে। প্রতিটি গাছ নিজের হাতে লাগিয়েছেন, নিজের হাতে জল দিয়েছেন। বাগানে প্রবেশ করলে যেন এক টুকরো স্বর্গে পা রাখা যায়।

দিলীপবাবু বলেন, “যখন আমার বাগানে ঢুকি, মনে হয় পৃথিবীর সব দুশ্চিন্তা দূর হয়ে গেছে। পাখির ডাক, ফুলের গন্ধ আর গাছের ছায়া আমাকে নতুন করে বাঁচার অনুপ্রেরণা দেয়। যারা এখানে আসেন, তারাও বলেন—এই জায়গাটা যেন তাদের সমস্ত ক্লান্তি মুছে দেয়।”তিনি আরও বলেন, “এই গাছগুলো আমার সন্তান। প্রতিটি গাছের বিকাশ দেখলে মনে হয় যেন আমার সন্তান বড় হচ্ছে। যারা মনে করে গাছ কাটা তেমন বড় অপরাধ নয়, তারা বুঝতে পারে না—প্রতিটি গাছ একটি জীবনের মতো। আমি আমার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত গাছ লাগাবো, যত্ন করবো। আমার মৃত্যু হলেও, এই গাছগুলো আমার নাম বাঁচিয়ে রাখবে।”পরিবেশকে রক্ষা করার এই উদ্যোগে দিলীপ সাঁতরা আজ অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন। তাঁর বাগান শুধু গাছ নয়, ভালোবাসার এক জীবন্ত নিদর্শন।

By admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *