তারক হরি, পশ্চিম মেদিনীপুর পশ্চিম: মেদিনীপুরের পিংলা অঞ্চলের নয়া গ্রামে আগামী ২৫শে ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে বার্ষিক পট চিত্র মেলা। মেলা উপলক্ষে ইতিমধ্যেই সাজ সাজ রব শুরু হয়েছে। পট শিল্পীরা তাদের নানান রঙিন পট চিত্র, ঐতিহ্যবাহী সামগ্রী, গয়না এবং হস্তশিল্পের পসরা সাজিয়ে তুলছেন। রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী এই মেলা শুধু বাংলার নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও পরিচিতি লাভ করেছে।
পিংলার পট চিত্র মেলা পটশিল্পের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও কৃষ্টিকে উদযাপন করার একটি বিশেষ মঞ্চ। এই মেলা শিল্পীদের জন্য এক অসাধারণ সুযোগ, যেখানে তারা নিজেদের সৃষ্টিশীলতা তুলে ধরেন। পিংলার পটশিল্পীরা মূলত তাদের হাতে আঁকা কাহিনীচিত্রের জন্য বিখ্যাত, যা বহু প্রাচীন ভারতীয় লোককাহিনী এবং মিথোলজিকাল কাহিনী তুলে ধরে।পিংলার পট শিল্পী বাহাদুর চিত্রকর বলেন, “এই মেলা আমাদের জীবনের খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশ। মেলার সময় আমাদের গ্রামে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষজন আসেন। এমনকি বিদেশ থেকেও বহু মানুষ এই মেলা দেখতে আসেন। দেশ-বিদেশের মানুষের উপস্থিতি আমাদের শিল্পকর্মের চাহিদা আরও বাড়িয়ে তোলে।”মেলা উপলক্ষে স্থানীয়রা জানান, পিংলার নয়া গ্রাম উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। দেশ-বিদেশের দর্শক ও ক্রেতারা এখানে এসে শিল্পীদের তৈরি নানা রকম পটচিত্র, পটের গান এবং হাতে তৈরি সামগ্রী কেনেন।
শুধু কেনাকাটা নয়, এই মেলা শিল্পীদের জন্য একটি সাংস্কৃতিক আদানপ্রদানের সুযোগও তৈরি করে।এই মেলায় বড় আকর্ষণ থাকে পটশিল্পীদের হাতে আঁকা পটচিত্র। নারকেল খোল, কাপড়, পটের বোর্ড এবং প্রাকৃতিক রঙ ব্যবহার করে শিল্পীরা এসব চিত্র তৈরি করেন। পটচিত্রের সঙ্গে পটের গান এই শিল্পকে আরও জীবন্ত করে তোলে।পট মেলার মাধ্যমে স্থানীয় অর্থনীতিতে নতুন প্রাণ সঞ্চার হয়। একই সঙ্গে, লোকশিল্প ও সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রসারেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই মেলা। ২৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই মেলায় শিল্পপ্রেমীদের সমাগমে আবারও এক বর্ণময় পরিবেশ তৈরি হবে পিংলার নয়া গ্রামে।