তারক হরি, পশ্চিম মেদিনীপুর: পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা থানার মোহনপুর গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক সাধারণ পরিবার থেকে উঠে এসে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন মা ও মেয়ে। জাতীয় যোগা চ্যাম্পিয়নশিপে একইসঙ্গে প্রথম স্থান অর্জন করে তাঁরা দেখালেন যে অধ্যবসায় এবং সংকল্প দিয়ে সব সম্ভব।
সেক সাব্বির আলি ও তাহেরা খাতুনের ৭ বছরের মেয়ে সনম খাতুন ছোট থেকেই যোগব্যায়ামের প্রতি আগ্রহী। স্থানীয় স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী সনম ইতিমধ্যেই জাতীয় স্তরে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে স্বর্ণপদক জিতেছে। তার মা তাহেরা খাতুন নিজেও একজন দক্ষ যোগব্যায়াম শিল্পী, যার ঝুলিতে রয়েছে জেলা ও রাজ্য স্তরের বহু ট্রফি ও সম্মান। এই মা-মেয়ের যুগলবন্দি এবার জাতীয় স্তরে নজর কাড়ল।২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে বিশাখাপত্তনমে অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল যোগা চ্যাম্পিয়নশিপে জুনিয়র বিভাগে সনম প্রথম স্থান অধিকার করে এবং সিনিয়র বিভাগে তাহেরা প্রথম হন। এর আগে জুন মাসে উত্তরাখণ্ডে অনুষ্ঠিত জাতীয় যোগা প্রতিযোগিতায় প্রায় ১০০০ প্রতিযোগীর মধ্যে দুজনেই দ্বিতীয় স্থান পেয়ে সিলভার ট্রফি অর্জন করেন।সনমের বাবা-মা জানিয়েছেন, যোগব্যায়ামের প্রতি ভালোবাসা ও কঠোর অনুশীলনের ফলেই এই সাফল্য সম্ভব হয়েছে। পাশাপাশি পড়াশোনা, আঁকা এবং জিমন্যাস্টিকের প্রতিও সমান আগ্রহী সনম।

পরিবারের সদস্যরা সর্বদা তার পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাহেরা জানিয়েছেন, গৃহকর্ম সামলেই তিনি নিজে যোগব্যায়ামে অনুশীলন করতেন এবং মেয়েকেও প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।বৃহস্পতিবার সনম ও তাহেরা ট্রফি এবং মেডেল নিয়ে মোহনপুরে ফিরলে এলাকাবাসী উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। বালিচক স্টেশনে রেলকর্মীরা তাঁদের শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি এলাকাবাসীরাও সংবর্ধনা দেন। জেলা প্রশাসনও তাঁদের সম্মানিত করার উদ্যোগ নিয়েছে।মা-মেয়ের এই যুগলবন্দি পশ্চিম মেদিনীপুরের গর্বের মুকুটে এক নতুন পালক যোগ করেছে। এলাকাবাসী এবং শুভানুধ্যায়ীরা প্রত্যাশা করছেন যে সনম ও তাহেরা ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের নাম আরও উজ্জ্বল করবেন।