সংবাদ জনকণ্ঠ নিউজ ডেস্ক : সম্প্রতি বাংলাদেশে ভারতের জাতীয় পতাকার অবমাননা এবং ওই দেশের সংখ্যালঘু হিন্দু ও মডারেট মুসলমানদের গণহত্যার প্রতিবাদে ইতিপূর্বেই ভারতে চিকিৎসা করতে আসা বাংলাদেশীদেরকে সামাজিক ভাবে বয়কটের দাবী জানিয়েছে ভারতের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল অখিলভারত হিন্দুমহাসভা । আজ তারা রাজ্য সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর নেতৃত্বে মানিকতলা মোড়, গিরিশ পার্ক ক্রসিং , কলকাতা হাইকোর্ট সহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় দোকান থেকে বাংলাদেশী পণ্য প্রোডাক্ট কিনে রাস্তায় ছড়িয়ে দিয়ে, আগুনে পুড়িয়ে দিয়ে এবং কুকুরকে খাইয়ে দিয়ে অভিনব পদ্ধতিতে প্রতিবাদ জানালো ।
সেই সাথে পথচলতি মানুষ এবং বিভিন্ন দোকানে লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে তারা আবেদন করলো যেন তারা বাংলাদেশী সংস্থার সমস্ত প্রোডাক্ট সম্পূর্ণভাবে বয়কট করে ও স্বদেশী প্রোডাক্ট বিক্রি করে । ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর বক্তব্য বাংলাদেশে যেভাবে ভারতের জাতীয় পতাকাকে পদদলিত করা, হিন্দুদের ও মডারেট মুসলমানদের খুন করা, চিন্ময়কৃষ্ণ প্রভুকে অন্যায় ভাবে গ্রেপ্তার করা, চিন্ময় প্রভুর পক্ষের দুইজন আইনজীবীকে মেরে আই.সি.ইউ. তে ভর্তি করে দেওয়ার মত একাধিক পাপ করে চলেছে তাতে তাদের অপরাধের কোন ক্ষমা নেই । বাংলাদেশ আজ বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে যে আত্মপ্রকাশ করেছে সেটি ভারতবর্ষের সেনা জওয়ানদের আত্মবলিদানের ফলেই । ওদের পতাকার মাঝে উদীয়মান সূর্যের প্রতীকটি আমাদের সেনা জওয়ানদের চাপ চাপ রক্তের বিনিময়েই এত গাঢ় লাল বর্ণের । ওদের মত তরবারি নিয়ে মানুষকে হত্যা করার আস্ফালন বা মানুষকে পিটিয়ে মেরে ফেলে সেই মৃতদেহ শহরের প্রাণকেন্দ্র ঝুলিয়ে রাখা আমাদের সংস্কৃতি নয় । কিন্তু আমরাও মহাভারতে শিশুপালের মত অপরাধীদের অপরাধ চরম সীমা অতিক্রম করলে তাকে কঠোরতম শাস্তি দিতে জানি । আমরা আপাতত শুধু চিকিৎসা করতে আসা বাংলাদেশীদের হোটেল বা ঘরভাড়া না দিয়ে, দোকানে জিনিস না বিক্রি করে বা হোটেলে খেতে না দিয়ে সীমিত শিক্ষা দিতে চলেছি । আমরা একবারও বলিনি যে এই দেশে চিকিৎসা করতে আসা সকলেই সন্ত্রাসী মৌলবাদী ।
কিন্তু ওরা মডারেট মুসলিম নাকি ওরা সন্ত্রাসী মৌলবাদীদের পক্ষে সেটা ম্যাগনিফাইং গ্লাস দিয়ে যাচাই করার দায়িত্ব আমরা ভারতীয়রা নিয়ে রাখিনি । পৃথিবীতে অনেক মুসলিম দেশ আছে, ভারতেও হিন্দু মুসলমান শিখ বৌদ্ধ সবাই বসবাস করে কিন্তু এই বাংলাদেশীদের মত কোথাও এত কৃতঘ্ন বেইমান দেখা যায়না । ওরা চিকিৎসা করাতে এসে ঘাড় ধাক্কা খেয়ে নিজের দেশে ফিরে যাক এবং তারপর সন্ত্রাসী মৌলবাদীদের কলার চেপে ধরে বলুক যে ওদের জন্যই মুসলিম ধর্ম কালিমালিপ্ত হচ্ছে এবং সারা পৃথিবীতে বাংলাদেশ ঘৃণিত ও নিন্দিত হচ্ছে । বাংলাদেশ যদি অতিসত্বর এই বর্বরতা না বন্ধ করে তাহলে বাংলার মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবেদন অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সরকার যাতে বাংলাদেশে শান্তিসেনা পাঠিয়ে নরপিশাচদের উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করে সেই দিকেই সওয়াল করেছেন হিন্দু মহাসভার রাজ্য সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামী । হিন্দু মহাসভার মহিলা শাখার কনভেনর প্রজ্ঞা ভারতী জোরের সাথে বলেন ওরা আমাদের ভাইদের প্রাণে মেরেছে তাই আমরা ওদের ভাতে মেরে পাপের শাস্তি দেব । সেই জন্য বাংলাদেশি সমস্ত প্রোডাক্ট বর্জন করে আমরা দেশীয় হস্তশিল্প ও কুটিরশিল্পের উপর জোর দিচ্ছি ।
অফিস সেক্রেটারি অনামিকা মন্ডল বলেন বাংলাদেশে নরপিশাচরা যেভাবে নারী ও শিশুদের উপর অত্যাচার করছে তা সমগ্র মানবসভ্যতার কাছে লজ্জার । মহাসভার আইনী উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট দীনেশ পানি বলেন হিন্দু মহাসভার আইনজীবী প্রকোষ্ঠ রাজ্য সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর নেতৃত্বে আগামী দিনে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে বাংলাদেশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করতে চলেছে । বাংলাদেশে বর্তমানে আইনব্যবস্থা যেভাবে ভেঙে পড়েছে ও মানবাধিকার যেভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে তা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও লজ্জা দেয় । আজ কলকাতার একাধিক স্থানে অখিলভারত হিন্দুমহাসভার রাজ্য সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামী ছাড়াও অনামিকা মন্ডল, প্রজ্ঞা ভারতী, সায়ক বোস, শশী আগরওয়াল, সরিতা সঙ্গনেরিয়া, অ্যাডভোকেট দীনেশ পানি সহ একাধিক নেতৃত্ব বিক্ষোভ কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন ।