এখনই শেয়ার করুন।

সংবাদদাতা, মালবাজার,:- সিরিয়ালের মত বাস্তবেও অপরাধের তদন্তের ক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা পালন করে সিসি ক্যামেরা। তবে মালবাজার শহরে কোনো দুর্ঘটনা বা অপরাধের তদন্তে পুলিশের ভরসা শুধুমাত্র দোকান, শপিংমলের বেসরকারি সিসি ক্যামেরা। নেই সরকারি সিসি ক্যামেরা। বর্তমানে মালবাজার শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কার্যত উলঙ্গ। যে কারণে বিভিন্ন তদন্তের ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে মাল থানার পুলিশকে।

আন্তর্জাতিক মানচিত্রে নিরাপত্তার দিক থেকে শিলিগুড়ির পর বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ শহর মালবাজার। উত্তর-পূর্ব ভারতের সাথে সড়কপথে এবং রেলপথে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম শহর মালবাজার। মাল বাজার শহরের নিউমাল জংশন স্টেশন থেকে রেলপথে খুব সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায় উত্তর পূর্ব ভারতের বিভিন্ন শহরে। দিনরাত হাজার হাজার সেনাবাহিনীর গাড়ি চলাচল করে মালবাজারের ওপর দিয়ে। সম্প্রতি, মালবাজার শহরকে কেন্দ্র করে গজিয়ে উঠেছে একাধিক বেআইনি চক্র। বড়সড়ো কোন দুর্ঘটনা বা সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ ঘটলে প্রমাণ হিসেবে পুলিশের হাতের নাগালে থাকবে না কিছুই। কারণ মালবাজার মহকুমা শহরের অধিকাংশ সিসি ক্যামেরা বিকল অবস্থায় পড়ে আছে। এর আগেও একাধিকবার সিসি ক্যামেরা বসানো হলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেই ক্যামেরা বর্তমানে অকেজো। ২০১৯ সালে মালবাজার শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় মোট ১৬ টি সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছিল মালবাজার পৌরসভা। নিরাপত্তা জনিত কারণে মালবাজার সুভাষ মোড়, ঘড়ি মোড়, ক্যালটেক্স মোড়, মালবাজার বাস স্ট্যান্ড, পম্পা সিনেমা হল এবং স্টেট ব্যাংকের সামনে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়। বর্তমানে প্রতিটি ক্যামেরা বেহাল অবস্থায় অকেজো হয়ে আছে। যেকোনো চুরি, ছিনতাই বা দুর্ঘটনা ঘটলে পুলিশের ভরসা সেই কোন দোকান অথবা শপিংমলের সিসি ক্যামেরা। পুলিশ মহলের একাংশ কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন, বিভিন্ন তদন্তের সময়ে সিসি ক্যামেরা না থাকায় সেই ধাঁধা সমাধান করা যায় না। সিসি ক্যামেরার রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়ে উদাসীন মালবাজার পৌরসভা এবং পুলিশ প্রশাসন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিকল সিসি ক্যামেরা গুলো প্রতিস্থাপন করার জন্য বহুবার মালবাজার পৌরসভায় জানানো হয়েছিল, কিন্তু পুলিশের কথাতে কোনো কাজ হয়নি। মালবাজারের নাগরিক মহল থেকে দাবি উঠছে, শহরের সুভাষ মোড়, ক্যালটেক্স মোড়, বাসস্ট্যান্ড, ঘড়ি মোড় সহ সত্যনারায়ণ মোড়, হাসপাতাল মোড়, গুরজং ঝোরা মোড়,‌ পোস্ট অফিস মোড়, রায় এন্ড কাজিন পেট্রোল পাম্পের কাছে সিসি ক্যামেরা বসানো হোক। তবে সিসি ক্যামেরা রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়ে পৌরসভা এবং পুলিশ প্রশাসন এতটা উদাসীন কেন সেই বিষয়ে শহর জুড়ে চলছে সমালোচনা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নীলেশ শ্রীকান্ত গায়কোয়াড মহকুমা পুলিশ আধিকারিক থাকাকালীন সিসি ক্যামেরা সংক্রান্ত বিষয়ে চিঠি করেছিলেন পৌরসভা কে, তারপরেও সক্রিয় ভূমিকা নেয়নি মালবাজার পৌরসভা।

সুভাষ মোড়ের ব্যবসায়ী বিমল বর্মন বলেন, বিভিন্ন সময়ে অপরাধের ক্ষেত্রে পুলিশকে একমাত্র সহযোগিতা করে সিসিটিভি ক্যামেরা, তবে মালবাজার শহরে সিসি ক্যামেরা বিকল থাকায় আমাদের শহর কার্যত নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। স্থানীয় সমাজসেবী সুশান্ত দাসের কথায়, অপরাধীদের চিহ্নিত করার প্রাথমিক কাজ করে সিসি ক্যামেরারর ফুটেজ, আর সেই সিসি ক্যামেরা অকেজ হয়ে থাকায় বিভিন্ন সময়ে তদন্তে বেগ পেতে হচ্ছে পুলিশকে। বিজেপির মাল টাউন মন্ডল সভাপতি নবীন সাহার অভিযোগ , মালবাজার শহর অন্যতম স্পর্শকাতর এলাকা হলেও সেই শহরের নিরাপত্তা নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে প্রশাসন। প্রশাসনের সদিচ্ছা থাকলেই সিসি ক্যামেরার রক্ষণাবেক্ষণ সম্ভব। এ বিষয়ে মালবাজার পৌরসভার উপ পৌর প্রধান উৎপল ভাদুড়ী বলেন, সিসি ক্যামেরা রক্ষণাবেক্ষণ এর বিষয়টি নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদিও এ বিষয়ে বর্তমান এসডিপিও রোশন প্রদীপ দেশমুখ বলেন, নতুন দায়িত্বভার গ্রহণ করেছি, সিসি ক্যামেরার বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক, আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করবো।

By admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *