নিজস্ব সংবাদদাতা পশ্চিম মেদিনীপুর:-আরজি কর ইস্যুতে সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় যখন শিক্ষকদের বড় একটি অংশ পথে নেমে বিক্ষোভে সামিল হয়েছে ঠিক সেই সময় দাঁড়িয়ে গোটা একটি জেলার সিংহভাগ প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষিকাদের একত্রিত করে বিজয়া সম্মেলনী করে নজর কাড়ল মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভূঁঞ্যার উপস্থিততে নবনিযুক্ত ডিপিএসসি চেয়ারম্যান অনিমেষ দে।
শিক্ষক নেতৃত্বদের আহ্বানে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম মেদনীপুর জেলার প্রায় সমস্ত নেতা-মন্ত্রী-বিধায়করা। ছিলেন ক্যাবিনেট মন্ত্রী ডাঃ মানস রঞ্জন ভুঁইয়া, প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাত এবং শিউলি সাহা, বিধায়ক দীনেন রায়, অজিত মাইতি, মমতা ভুঁইয়া, সূর্যকান্ত অট্ট, উত্তরা সিংহ হাজরা, জেলা পরিষদের সভাধিপতি প্রতিভা মাইতি, শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র, পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ প্রমুখ। সর্বোপরি উপস্থিত ছিলেন, মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা মেদিনীপুর বিধানসভা উপনির্বাচনের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সুজয় হাজরা, ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি আশিস হুদাইত, মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি তথা নবনিযুক্ত ডিপিএসসি চেয়ারম্যান অনিমেষ দে।
এদিনের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়ন ও সেচ দপ্তরের মন্ত্রী ডাঃ মানস রঞ্জন ভুঁইয়া
মঞ্চে বক্তৃতা দিতে উঠে শিক্ষকদের শৃঙ্খলা নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেন । শিক্ষকদের জন্য এদিন দুপুরের খাবারের (লাঞ্চের) ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বেলা ১টার পর থেকেই শিক্ষক-শিক্ষিকারা সেই দিকে (খাবারের জায়গার দিকে) রওনা দেওয়া শুরু করেন। প্রায় দেড়টা নাগাদ মাইক হাতে নেন মন্ত্রী মানস। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চেয়ার ছেড়ে উঠে যাওয়া দেখে ক্ষুব্ধ হন তিনি! বলেন, “এই শৃঙ্খলা নিয়ে ছেলেমেয়েদের কি শেখাবেন আপনারা?” কটাক্ষ করেন, “নির্বাচন করাতে গিয়েও কি সব ছেড়ে দিয়ে খেতে চলে যাবেন অপনারা? আমি কিন্তু খুব অসন্তুষ্ট!” তবে শিক্ষকদের উপস্থিতি এবং আয়োজন নিয়ে প্রশংসাও শোনা যায় তাঁর গলায়। অনুষ্ঠানের মাঝপথে তো রীতিমত আপ্লুত-কণ্ঠেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের এই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী সাংবাদিকদের শুনিয়েছেন, “পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সমস্ত প্রাথমিক শিক্ষকদের নেতৃত্বে এবং প্রাইমারি কাউন্সিলের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যানকে সঙ্গে নিয়ে ঐতিহাসিক প্রদ্যোৎ স্মৃতি সদনে আমরা এই মিলন অনুষ্ঠানের সূচনা করলাম। এবার দেখতে থাকুন। শুধু দেখতে থাকুন।
এদিনের এই বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠান থেকে শুধু মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার নেতৃত্ব বা জনপ্রতিনিধিরাই নয়; ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার নেতৃত্ব ও জনপ্রতিনিধিরাও মেদিনীপুর বিধানসভা উপনির্বাচনের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সুজয় হাজরাকে বিপুল ভোটে জয়ী করার আহ্বান জানান। খোদ প্রতিমন্ত্রী শিউলি সাহা থেকে পিংলার বিধায়ক তথা জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি অজিত মাইতিও এক রকম আহ্বান জানান। মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভুঁইয়া বলেন, “এই যেমন আপনারা ‘ডানা’ (দানা) ঝড় দেখলেন, ঠিক তেমনই বাংলা তথা ভারতবর্ষের রাজনীতিতে এখন মমতা ব্যানার্জির ঝড় উঠেছে! আমরা ছ’টি বিধানসভা উপনির্বাচনেই জিতব। মেদিনীপুর থেকে সুজয় রেকর্ড ভোটে জিতবে। ও মানুষের নেতা। সমাজের নেতা। নিজে ৫-৬টা নির্বাচন করিয়েছে। আমি তো আগেই বলেছি, সুজয় মানে সিওর জয়!”