মুমুর্ষু রোগীকে চিকিৎসা করাতে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যেতে গিয়ে মৃতু্র কোলে ঢলে পড়ল রোগী সহ সহযাত্রীরাও।মেদিনীপুর থেকে কেশপুরের দিকে যাচ্ছিল একটি বড় লরি। অন্যদিকে ঘাটাল থেকে রোগী নিয়ে একটি বড় অ্যাম্বুলেন্সে করে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উদ্দেশ্যে আসছিলেন অ্যাম্বুলেন্সের চালকসহ ৮ জন। রাত বারোটা নাগাদ মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুর থানার অন্তর্গত পঞ্চমী এলাকায়।
প্রচন্ড জোরে ওই সংঘর্ষে অ্যাম্বুলেন্সকে ধাক্কা মেরে অনেকদূর পর্যন্ত টেনে নিয়ে যায় লরিটি। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় অ্যাম্বুলেন্সে থাকা ৬ জন। আশঙ্কা জনক অবস্থায় রয়েছেন অবশিষ্ট দুজন। তাদের মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। রাতেই ঘটনাস্থলে হাজির হন পুলিশ সুপারের ধৃতিমান সরকার সহ পুলিশ কর্তারা। পরে হাসপাতালে হাজির হন অন্যান্য আধিকারিকরাও।
জানা গিয়েছে ঘাটাল থেকে বড় একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে চালকসহ ৮ জন দ্রুত গতিতে শুক্রবার রাত বারোটার পর যাচ্ছিলেন মেদিনীপুরের দিকে। ঘাটাল হাসপাতালে পেটের যন্ত্রনা নিয়ে ভর্তি ছিলেন ক্ষীরপাই এলাকার এক মহিলা। তাকে নিয়ে আরো দুই মহিলা সহ পাঁচজন পুরুষ রেফার করে নিয়ে যাচ্ছিলেন মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কেশপুর এলাকার পঞ্চমী দিয়ে তারা যখন যাচ্ছিলেন তখন উল্টো দিক থেকে একটি ১৬ চাকার লরি প্রচন্ড গতিতে একটি ব্রিজ থেকে নাম ছিল। ব্রিজ থেকে নামার সময় লরির ঝাঁঝালো আলো উল্টো দিকে নিচু অংশে রাস্তায় চোখে পড়ে অ্যাম্বুলেন্স চালকের। দুজনেই গতিতে থাকা অবস্থায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে অ্যাম্বুলেন্সকে জোরে ধাক্কা মেরে পৃষ্ঠ করে টেনে নিয়ে যায় অনেকটাই ওই ভারী লরি। এতে অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরে থাকা প্রায় সকলেই পৃষ্ঠ হয়ে যান। ওরা এসে উদ্ধার করার কাজ শুরু করে রাতেই। পড়ে সেখানে হাজির হয় কেশপুর থানার পুলিশ।
মেদিনীপুর থেকে হাজির হয়ে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সহ জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার ও অন্যান্য আধিকারিকরা। ঘটনাস্থলেই চারজনের মৃত্যু হয়। আশঙ্কা জনক অবস্থায় আরো চারজনকে উদ্ধার করা হয়। তাদের নিয়ে যাওয়া হয় মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে আরো দুজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। মৃতদের মধ্যে পুরুষ মহিলা সকলেই ছিলেন। তবে একমাত্র ওই রোগিনী মহিলা ও পুরুষ অ্যাম্বুলেন্স চালক ছাড়া সকলেই মারা গিয়েছেন। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় সকলেই হতভম্ব। রাতে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হাজির হন বিভিন্ন আধিকারিক।