নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা:বাংলাদেশে ভারতের জাতীয় পতাকার অবমাননা এবং সংখ্যালঘু হিন্দু ও মডারেট মুসলমানদের গণহত্যার বিরুদ্ধে ইতিপূর্বেই ভারতে চিকিৎসা করতে আসা বাংলাদেশীদের সামাজিক ভাবে বয়কট করার কর্মসূচী শুরু করেছে ভারতবর্ষের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল অখিলভারত হিন্দুমহাসভা । এবার তারা রাজ্য সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর নেতৃত্বে একযোগে কলকাতার দশটি মেট্রো স্টেশনের সামনে একই সময়ে সমস্তরকম বাংলাদেশী পণ্যসামগ্রী আগুনে পুড়িয়ে “বয়কট বাংলাদেশ” বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করলো । উত্তমকুমার, নেতাজী, মাস্টারদা সূর্যসেন, গীতাঞ্জলি, নজরুল, শহীদ ক্ষুদিরাম, কবি সুভাষ সহ দশটি মেট্রো স্টেশনের সামনে আজ হিন্দু মহাসভার সদস্যরা পার্শ্ববর্তী দোকান থেকে বাংলাদেশী খাদ্যসংস্থা “PRAN” এর প্রোডাক্ট কিনে এবং বাংলাদেশী জামাকাপড় একই সময় একযোগে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দিলেন ।
এই প্রসঙ্গে রাজ্য সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর বক্তব্য বাংলাদেশকে সার্বিক ভাবে বয়কট করা উচিত কারণ বাংলাদেশ আজ উন্মাদ সন্ত্রাসবাদীদের আঁতুড় ঘরে পরিণত হয়েছে । আর সেই জন্যই একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময়ের বাংলাদেশী বৃদ্ধ সেনা আধিকারিকও চার দিনের মধ্যে কলকাতা পর্যন্ত দখল করার বা ভারত এবং আমেরিকাকে একযোগে দখল করার আস্ফালন করছেন । ওরা ভুলে গেছে আমাদের সেনা জওয়ানদের আত্মবলিদানের ফলেই আজ পৃথিবীতে বাংলাদেশ নামে কোন রাষ্ট্র পৃথিবীর বুকে আত্মপ্রকাশ করেছে । আজ এই দেশে মহিলাদের একা বাজারে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিধি নিষেধ, বোরখা পড়ার বাধ্যবাধকতা, সঙ্গীতানুষ্ঠান নিষিদ্ধ করার ফতোয়া জারি হওয়া, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মূর্তি ভাঙা ও তার মাথায় প্রস্রাব করা, লাইব্রেরিতে অগ্নিসংযোগ, শপিংমল লুঠ করা, মানুষকে পিটিয়ে মেরেফেলে মৃতদেহ শহরের প্রাণকেন্দ্রে বেঁধে ঝুলিয়ে রেখে সেলফি তোলা ও ভিডিও ভাইরাল করা ইত্যাদি প্রমাণ করে এতদিন ধরে যে বাংলাদেশকে ভারত চিনে এসেছে তার ডি.এন.এ. অনেক আগেই বদলে গেছে । চীন ও পাকিস্তানের সাথে গভীর চক্রান্ত করে ভারতকে বেশ কিছুদিন ধরেই উত্ত্যক্ত করছে বাংলাদেশ এবং এক্ষেত্রে ভারতের অতিরিক্ত সহনশীলতা এবং তোষণমূলক বৈদেশিক নীতিও কিছুটা দায়ী থাকতে পারে বলে অনুমান ।
পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবেদন অনুযায়ী ভারতের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাবুর অনতিবিলম্বে বাংলাদেশে শান্তিসেনা পাঠানো প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন ডক্টর গোস্বামী । হিন্দুমহাসভার অফিস সেক্রেটারি অনামিকা মন্ডল বলেন বাংলাদেশে যেভাবে শিশু ও নারীরা অত্যাচারিত হচ্ছে সেটা যেকোন সভ্য সমাজকে লজ্জা দেয় । চিন্ময়কৃষ্ণ প্রভুকে অন্যায় ভাবে গ্রেপ্তার এবং ইসকনের উপর লাগাতার আক্রমণ একথা প্রমাণ করে বাংলাদেশে ধর্মীয় সহিষ্ণুতা বলে কিছু নেই ।
মহিলা শাখার কনভেনর প্রজ্ঞা ভারতীর বক্তব্য বাংলাদেশে যেহেতু আমাদের ভাইদের প্রাণে মারা হচ্ছে তাই পাল্টা আমরা ওদের ভাতে মারতে চাই । বাংলাদেশী প্রোডাক্ট সম্পূর্ণ ভাবে বয়কট করে এবং বিকল্প হিসেবে দেশীয় হস্তশিল্পজাত প্রোডাক্টকে প্রমোট করেই ওদেরকে সমুচিত শিক্ষা দেওয়া হবে । বাংলাদেশ প্রসঙ্গে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর নেতৃত্বে অখিলভারত হিন্দুমহাসভার পশ্চিমবঙ্গ শাখা আগামী দিনে যে আরো বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে চলেছে সেই ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই ।