নিজস্ব প্রতিনিধি, পশ্চিম মেদিনীপুর : পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা ব্লকের পশং মুচিপুকুর এলাকায় ঘটে গেল এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। পশং হাইস্কুলের প্রাক্তন ছাত্রী এবং বর্তমানে প্রথম বর্ষের কলেজ ছাত্রী প্রিয়া ওঝা সাইকেল নিয়ে যাওয়ার সময় ইটাবেরিয়া-হাওড়া বাসের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন। ঘটনাস্থলেই তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। দ্রুত তাঁকে স্থানীয় নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষ রক্ষা হয়নি।
তাঁর অকালমৃত্যুতে গোটা এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।প্রিয়ার স্কুলের শিক্ষক কিংকর অধিকারী জানান, “প্রিয়া অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী ছিল। ছোট থেকেই ছবি আঁকায় পারদর্শী ছিল। এমন একটি প্রাণ হারানোর ঘটনা মেনে নেওয়া কঠিন।”এই দুর্ঘটনার জন্য তিনি দায়ী করেছেন রাস্তার অবস্থা এবং প্রশাসনের উদাসীনতাকে। উল্লেখ্য, ঘটনাস্থলের রাস্তাটি বহুদিন ধরেই বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ১ কোটি ২১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে কাজ হওয়ার পরও কয়েক মাসের মধ্যেই রাস্তার অবস্থা ভেঙে পড়ে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাস চলাচলের উপযুক্ত না হলেও এই রাস্তায় বড় বড় বাসগুলি বেপরোয়াভাবে চলাচল করে, যা এমন মর্মান্তিক ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।কিংকরবাবু আরও জানান, রাস্তা মেরামতির জন্য তিনি বহুবার প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছেন। ‘দিদিকে বলো’ প্রকল্পেও তিনি অভিযোগ জানিয়েছিলেন। যদিও ডেবরা বিডিও অফিস থেকে ইন্সপেকশনের আশ্বাস দেওয়া হলেও তা কার্যকর হয়নি।
এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীরা প্রশাসনের প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে রাস্তাটি মেরামত করতে হবে এবং যান চলাচলে নিয়ম চালু করতে হবে। পাশাপাশি, প্রিয়ার পরিবারের জন্য আর্থিক সহায়তারও দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।প্রশাসন এই বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়, এখন সেটাই দেখার। কিন্তু একটি তরতাজা প্রাণের অকালমৃত্যু এই প্রশ্নই তুলে দিচ্ছে—এই উদাসীনতা আর কত প্রাণ কেড়ে নেবে?