খাদের কিনারায় থাকার পরেও কী ভাবে ঘুরে দাঁড়ানো যায়, তার প্রমাণ শনিবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনাল। জেতার পরিস্থিতি থেকেও ভারতের হাত থেকে প্রায় বেরিয়ে গিয়েছিল ম্যাচ। ম্যাচ প্রেডিকশনও বলেছিল ভারতের জেতার চান্স মাত্র ২৩ শতাংশ। আর সেখান থেকেই মাত্র দু’টি ওভারে ঘুরে যায় খেলা। এ ছাড়াও ভারতের জয়ের নেপথ্যে রয়েছে বিবিধ কারণ। এই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হল জয়ের কাণ্ডারী অন্যতম সেরা সেই ৫ কারণ –
হার্দিক বোলিং এফেক্ট– দশম ওভারে হার্দিক পাণ্ডিয়াকে দিয়ে একটি ওভারই করিয়েছিলেন রোহিত শর্মা। তার পরের দিকে হেনরিখ ক্লাসেনের ব্যাটিংয়ের সামনে স্পিনারেরা বেধড়ক মার খাওয়ার পর কিছুটা বাধ্য হয়েই হার্দিককে এনে ফাটকা খেলেছিলেন রোহিত। সেটাই কাজে লেগে যায়। ১৭তম ওভারে হার্দিককে আনাই ম্যাচের অন্যতম সেরা মুহূর্ত হয়ে থাকল। প্রথম বলেই বিপজ্জনক ক্লাসেনকে আউট করেন তিনি। আর একই সাথে সেই ওভারে মাত্র চার রান দেন তিনি। প্রোটিয়াদের মনে হারের ভয় ধরে সেখান থেকেই। অবশ্য এক্ষেত্রে বলা ভালো, ১৬তম ওভারে বুমরাকে এনে এক ধাক্কায় প্রোটিয়াদের রানের গতি কমিয়ে দেওয়া হয় তার আগেই।
সূর্যের অসাধারণ ক্যাচ — ২০তম ওভারে হার্দিকের প্রথম বলে ডেভিড মিলারের যে ক্যাচটা সূর্যকুমার যাদব নিলেন, তা শুধু এই বিশ্বকাপ নয়, ভারতের ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম সেরা ক্যাচ হয়ে থাকল। ওই সময় মিলারের শট ছয় হয়ে গেলে নিশ্চিত ভাবে ভারত হারত। চাপের মুখে বাউন্ডারির ধারে প্রথমে সূর্যকুমার ক্যাচ ধরলেও শরীরের ভারসাম্য না রাখতে পেরে বল উপরে ছুড়ে দেন। বাউন্ডারির ও পারে চলে গিয়েও দ্রুত এ পারে এসে ফের ক্যাচ ধরে মিলারকে ফেরত পাঠান সূর্য।
কোহলির মাইন্ড ব্লোয়িং ৭৬ –ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে জেতার পর রোহিত বলেছিলেন, ফাইনালের জন্য সেরাটা তুলে রেখেছেন কোহলি। ঠিক সেটাই হল। এ দিন রোহিত শুরুতে আউট হন। পর পর ফিরে যান সূর্যকুমার যাদব, ঋষভ পন্থ। কোহলি চালিয়ে শুরু করলেও কিছুটা ধরে খেলেন। তার পরে ৫০ পেরতেই যেন জ্বলে ওঠেন বিরাট। আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে খেলে প্রায় শেষ পর্যন্ত থেকে যান।
হঠাৎ অক্ষর নামলেন আগে –রোহিত, সূর্য এবং পন্থ পর পর আউট হয়ে যাওয়ায় আচমকাই চাপে পড়ে গিয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। সেই সময় কোহলির পাশে দরকার ছিল এমন একজনকে, যিনি সেই মুহূর্তে বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে ধরে খেলতে পারেন। সেই তালিকায় একজনই ছিলেন। শিবম দুবে বা হার্দিক পাণ্ডিয়াকে না নামিয়ে অক্ষরকে নামানো হয় এদিন। কোহলির সঙ্গে জুটি বেধে দলকে নির্ভরযোগ্য জায়গায় নিয়ে যান পটেল।
দক্ষিণ আফ্রিকার ছন্দপতন– ১৫ ওভারের শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার ৩০ বলে ৩০ রান দরকার ছিল। সেই সময় ক্রিজ়ে ছিলেন হেনরিখ ক্লাসেন এবং ডেভিড মিলারের মতো প্রতিষ্ঠিত ব্যাটার। সেখান থেকেও যে প্রোটিয়ারা হেরে যেতে পারে, সেটা না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। কেন তাদের ‘চোকার্স বলা হয়, এটা এদিন আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল। তবে সব শেষে বলা ভালো, এটার টিমের জয়, সবার উনিশ-বিশের অবদান না থাকলে ১৭ বছরের ক্ষরা কোনও ভাবেই কাটতো না।তাই Hats Off গোটা টিম ইন্ডিয়াকেই।