
শ্রেয়সী দে, ডুয়ার্স:- প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে শুক্রবার মুক্তি পেল অক্ষয় কুমার অভিনীত বলিউড সিনেমা স্কাই ফোর্স। ১৯৬৫ সালের ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের চিত্রনাট্য দেখা যাবে এই সিনেমায়। ক্যামেরার পেছনে থেকেও এই সিনেমা তৈরির অন্যতম কারিগর কৃষ্ণেন্দু তাক লাগিয়েছে দেশে বিদেশে। সিনেমার অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সকলের চিনলেও ক্যামেরার পেছনে যারা দিনরাত কাজ করে তাদের অধিকাংশই আমাদের কাছে অপরিচিত। কৃষ্ণেন্দু ও ঠিক এমনই একটি অপরিচিত নাম। সে সিনিয়র কম্পোসিটার পদে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে বলিউডে। বিভিন্ন শট ভিডিও কে এক জায়গায় করে সেটাকে ফাইনাল টাচ্ দেওয়ার কাজ করে কৃষ্ণেন্দু।২০১৭ সাল থেকে প্রচুর সিনেমা, ওয়েব সিরিজে নিজের দক্ষতার ছাপ রেখেছে সে।বিগত বছরে আমাজন প্রাইম ভিডিও তে নির্দেশক ম্যাট ব্যটিনেলি ওলপিম এর আবিগালি চলচ্চিত্রে কাজ করেছে কৃষ্ণেন্দু। ঐতিহাসিক পটভূমিতে তৈরি চলচ্চিত্র ‘দোস এবাউট টু ডাই’ নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছিল। এছাড়াও নাইটস ওফ দ্য জোডিআক, টাইম ব্যানডিটস, বিকন২৩ সহ বিভিন্ন ওয়েব সিরিজে কম্পোজিটের কাজ করেছে। সেই সাথে বলিউডের হৃত্বিক রোশন অভিনীত ফাইটার চলচ্চিত্রে রয়েছে তার অবদান। অমিতাভ বচ্চন অভিনীত ব্রহ্মাস্ত্র একাধিক জাতীয় পুরস্কার অর্জন করেছে, সেই চলচ্চিত্রেও সুনিপুণভাবে কাজ করেছে কৃষ্ণেন্দু। এস এস রাজামৌলির “ত্রিপল আর” এর অস্কার বিজয়ে অন্যতম কারিগর মাল শহরের কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী। এছাড়াও জন আব্রাহামের অ্যাটাক, সলমনের কিসি কা ভাই কিসি কা জান, সৈফ আলি খানের ভুত পুলিশ, রনবীর কাপুরের জগ্গা জাসুস, অজয় দেবগনের গোলমাল এগেইন, দিপীকার পদ্মাবত, কঙ্গনা রানাওয়াতের মনিকর্ণিকা সহ অন্যান্য বলিউড সিনেমায় নিজের মুন্সিয়ানা দেখিয়েছে কৃষ্ণেন্দু। সেই সাথে বেশ কিছু দক্ষিণী চলচ্চিত্রে কাজ করেছে সে। সম্প্রতি, অক্ষয় কুমার অভিনীত স্কাই ফোর্স মুক্তি পেল বড় পর্দায়। কম্পিউটারের মাধ্যমে ভারত পাক যুদ্ধে ভারতীয় বায়ু সেনার অসীম বীরত্ব ফুটিয়ে তুলেছে কৃষ্ণেন্দু।মাল শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর কলোনিতে বাড়ি কৃষ্ণেন্দুর। বাবা নিহার চৌধুরী পেশায় ব্যবসায়ী ও মা অর্চনা চৌধুরী গৃহবধূ। মাল আদর্শ বিদ্যাভবন থেকে স্কুলের পাঠ শেষ করেছে সে। ছোট বেলা থেকেই শিল্পকলার প্রতি ঝোঁক ছিল তার। তাই মালবাজার পরিমল মিত্র স্মৃতি মহাবিদ্যালয় থেকে স্নাতক হয়ে প্রথমে শিলিগুড়ি এবং পরে কলকাতায় গ্রাফিক্স ডিজাইনের কোর্স করে কৃষ্ণেন্দু। প্রশিক্ষণের পর সে মুম্বাইতে একটু সমস্যায় কর্মরত। তার মূল কাজ সিনেমায় ভিজুয়াল এফেক্টস দেওয়া। ভবিষ্যতে আরও অনেক সিনেমায় কাজ করতে চায় কৃষ্ণেন্দু। কৃষ্ণেন্দু বলেন, সিনেমা মুক্তির পর পর্দায় আমাদের দেখা যায়না, তাই আমাদের বিষয়ে না জানাটাই স্বাভাবিক। বিশেষ করে রাজামৌলির অস্কার জয়ী সিনেমায় কাজ করতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে হয়েছে। মাল আদর্শ বিদ্যাভবনের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক উৎপল পাল বলেন, কৃষ্ণেন্দু আমাদের প্রাক্তন ছাত্র, এখন বেশ গর্ব হয় ওঁর জন্য। মাল পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান উৎপল ভাদুড়ি বলেন, কৃষ্ণেন্দুর মতো প্রতিভা আমাদের শহরে অনেক আছে, সকলের উচিত সেই প্রতিভাদের উৎসাহিত করা। সাথে ওঁর জন্য শুভেচ্ছা।
।